বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা :
“সম্প্রতি আমার বাবার হার্টে বেশ কয়েকটি ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসক বলেছেন দ্রুত অপারেশন না করলে বাবাকে বাঁচানো যাবেনা। বাবার চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় নিতে হবে, অপারেশন করাতে প্রয়োজন প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। কিন্তু এই অর্থ ব্যয় করার সামর্থ্য আমাদের নেই।” -এভাবেই কিছুদিন আগে নিজের বাবার চিকিৎসার ব্যপারে জানাচ্ছিলো সালাউদ্দিন সুমন নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ফিশারিজ ও মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের এক ছাত্র। যার বাবা একসময় ওমানে ব্যবসা করতো, বেশ ভালো ভাবেই কাটছিল তার পরিবারের দিনগুলো। কিন্তু হঠাৎ মারাত্নক ভাবে ব্যবসায় ক্ষতি হবার কারণে দেশে ফিরে আসে সালাউদ্দিনের বাবা এবং এরপর থেকেই শুরু হয় তাদের আর্থিক সংকট।
সম্প্রতি বাবার হার্টে ব্লক ধরা পড়ার পর সকল সংকোচ ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের জানাতে বাধ্য হয় সালাউদ্দিন। তার বাবার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ছিল প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। এরপরে সালাউদ্দিন সন্দীপ এক ক্লিনিক থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল, সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন, এর পরে ঢাকায় একের পর এক হাপাতালে ছুটাছুটি করলেও বাঁচাতে পারেনি তার বাবা’কে। শতচেষ্টার পরও গতকাল সোমবার জীবনের প্রদীপ নিভে যায় সালাউদ্দিনের বাবার।
বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে সে জানায়, “টাকার অভাবে আমার বাবা বিনা চিকিৎসায় মারা গেল, বন্ধুদের তোলা ১৫ হাজার টাকা আর ডিপার্টমেন্টের শারমিন সুরাইয়া ম্যামে’র ২০০০ টাকা ছাড়া, শান্তনা দিয়েও একটা কথা বলেনি কেউ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও কেউ খোঁজ-খবর নেয় নি।”
এবিষয়ে শিক্ষার্থী উপদেষ্টা ড. মো: শরাফত আলী জানায়, “আমি সালাউদ্দিনের বাবার মৃত্যুর বিষয়ে অবগত থাকলেও চিকিৎসার ব্যপারে লিখিত ভাবে আমাকে জানানো হয়নি। যদি বিভাগীয় সভাপতির সুপারিশক্রমে তাকে দরখস্ত দেওয়া হতো তাহলে সাত সদস্যের অর্থ কমিটিতে উত্থাপন ও বিশ্লেষণের পর উপাচার্যের আনুমোদনের মাধ্যমে “ছাত্র তহবিল” হতে সহযোগিতা দেওয়া যেতো।”
তবে, এভাবে টাকার জন্য বিনা চিকিৎসায় আর কারো পিতা যেন দুনিয়া ছেড়ে না চলে যায় ক্রন্দনের সুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সেই আবেদন পিতৃহারা সালাউদ্দিন সুমনের।
উল্লেখ্য, গত ১৫ই আগস্ট সালাউদ্দিনের বাবার অপারেশনের তারিখ ছিল। টাকা কারণে চিকিৎসা না করতে পারায় বাবা চলে গেল। এদিকে সাত সদস্যের সংসারের চাকা কি ভাবে চলবে সেই দুঃশ্চিন্তা এখন বশেমুরবিপ্রবির ছাত্র সালাউদ্দিনের।